বন্যায় নবনির্মিত দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনের প্রায় ৫০০ মিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেল মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর। তিনি বলেন, এটা বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি যুগান্তকারী প্রকল্প। সরেজমিন পরিদর্শনে দেখলাম—বন্যায় প্রায় ৫০০ মিটারের মতো রেলপথের ক্ষতি হয়েছে।
শুক্রবার চট্রগ্রামের সাতকানিয়ার কেঁওচিয়ার তেমুহনী এলাকার রেলপথ নির্মাণ এলাকা পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
এদিন রেলপথ এলাকা পরিদর্শন করেন রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) প্রকৌশলী মো. কামরুল আহসান। তার সঙ্গে ছিলেন রেল মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর, দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনের প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান, প্রকল্পের ঠিকাদার তমা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আতাউর রহমান ভূঁইয়া।
হুমায়ুন কবীর বলেন, রেলপথের কোনো স্লিপার বাঁকা হয়নি। কিছু জায়গায় পাথর সরে পাত ঝুলে আছে। তবে কিছু পত্রিকার রিপোর্ট দেখে মনে হচ্ছে রেলের এমব্যাংকমেন্ট ভেঙে ভেসে চলে গেছে। ও রকম কিছু হয়নি। কিছু কিছু জায়গায় রেললাইনের নিচে পানি জমেছে।
বর্তমানে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের দোহাজারী পর্যন্ত রেলপথ রয়েছে। দোহাজারী থেকে চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, রামু হয়ে বন, পাহাড় বেয়ে ও নদীর ওপর দিয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথটির নির্মাণকাজ করা হয়েছে। নির্মাণাধীন ১০০ কিলোমিটারের এই ডুয়েলগেজ রেলপথের মধ্যে এখন ৮৮ কিলোমিটার রেলপথ দৃশ্যমান। এর মধ্যেই ৩ থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত টানা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, লোহাগাড়া ও চন্দনাইশ উপজেলা প্লাবিত হয়। এতে রেললাইনটি ডুবে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সেখানে কী ধরনের ক্ষতি হয়েছে– এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘তা জানতে টেকনিক্যাল টিম কাজ করছে। কারিগরি দিক দিয়ে সমাধান কী, তা এ মুহূর্তে বলা যাবে না। ওদের সঙ্গে বসলে তা জানতে পারব কী কারণে হয়েছে। প্রকল্পটি সারা দেশের স্বপ্ন ছিল। প্রধানমন্ত্রী চান প্রকল্পে কোনোভাবেই যেন জনগণের ভোগান্তি না হয়।
আরেক প্রশ্নের জবাবে রেল সচিব বলেন, অতীতে এ রকম পানি কখনও হয়নি। গত ১০০ বছরের তথ্য-উপাত্ত নিয়ে সামগ্রিক বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছিল। স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করে কালভার্টের সংখ্যা বাড়িয়েছিলাম। এ রকম জনদুর্ভোগ যাতে আর না হয় প্রয়োজনে রেললাইন আরেকটি উঁচু করে আরও কালভার্ট করে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, সম্ভাব্যতা যাচাই থেকে শুরু করে সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই নির্মাণকাজ হচ্ছে। নির্মাণকাজে কোনো গাফিলতি নেই। গাফিলতি থাকলে সেটি দেখা হবে। আমাদের টেকনিক্যাল টিমের সঙ্গে বসে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় দ্রুত সংস্কারকাজ শুরু করা হবে। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে রেল ট্রায়াল রানে যাবে। ওই মাসের শেষ সপ্তাহে কক্সবাজারের সঙ্গে রেল চলাচল উদ্বোধন করা হবে।